মীর মনিরুজ্জামান
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রস্তাবিত কাজের অনুমোদিত চুক্তিমূল্যর চুড়ান্ত বিল পাশ করে নির্ধারতি টাকা তুলে নিলেও প্রকল্পের এক ৩য়(১/৩) অংশের কাজের দৃশ্যমান চিত্র ফুটে উঠেছে মণিরামপুর উপজেলার ঝাপা ইউনিয়নের চন্ডিপুর সরকারি পুকুরের সৌন্দর্য বর্ধনের স্থবির কার্যক্রম।গোপনসূত্রের তথ্য আছে,উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা বিদ্যুৎ দাস ও ইতিপূর্বে নিজেকে শেখ সেলিমের জামাতা বলে দাবি করা হিসাবরক্ষক মোঃ মোক্তার হোসেনের কারসাজির সাথে ঝাপা ইউপির সাবেক বিতর্কিত চেয়ারম্যান মন্টুর লেনাদেনায় নাম মাত্র কাজ করেই চুড়ান্ত বিল ক্যাশ হয়েছে।কিভাবে কাজ শুরু করেই বিল নেওয়া হয়েছে তা জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা বিদ্যুৎ দাস বলছেন এলোমেলো!তিনি দাবী করছেন যে পর্যন্ত কাজ হয়েছে সে পর্যন্ত বিল দেওয়া।
এদিকে বিগত ৪মাস আগেই মনিরামপুর চিনাটোলা ব্রিজসহ বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ফুটে উঠলে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ দাস ঝালকাঠি বদলি হলেও কোন অজানা কারনে তিনি মনিরামপুরে বহালে আছেন সেটাই এখন স্থানীয় ঠিকাদার মহল এমন কি উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা আলোচনা করে চলেছেন।কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ও মুখ থুবড়ে পড়া প্রকল্পের রহস্যউন্মোচনে আজকের এ প্রতিবেদন।
তথ্যমতে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের আওতায় চন্ডিপুর স্কুল সংলগ্ন সরকারি পুকুরের প্যালাসেটিং ও সৌন্দর্য বর্ধনে প্রস্তাবিত কাজের অনুমোদিত চুক্তিমূল্য,৩২,২৯,২৭৯/-টাকা,চুক্তিমূল্যের বিপরীতে কাজ শুরু করতে হবে ০৭/০৫/২৪ইং এবং ০৭/০৯/২৪ইং তারিখের ভিতরে নির্দিষ্ট কাজ শেষ করে তদানুযায়ী বরাদ্ধ নিতে হবে।এমনই বিবরণ সম্বলিত একটি নোটিশ যশোরের শার্শার মেসার্স সূচি এন্টারপ্রাইজ সহ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দপ্তরে বিগত ০৫/০৫/২৪ইং তারিখে প্রকৌশল প্রধান বিদ্যুৎ দাসের স্বাক্ষরিত কার্যাদেশ প্রদান করে মণিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী(এলজিইডি) বিভাগ।
অথচ মণিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা বিদ্যুৎ দাস ও প্রকৌশলী হিসাবরক্ষক মোক্তার হোসেনের কারসাজি এবং ঠিকাদারি কাজের একক প্রভাবকারী সাবেক চেয়ারম্যান মন্টুর অফিসিয়াল/আন-অফিসিয়াল বড় বড় অর্থনৈতিক লেনদেনের সাথে আ”লীগের ক্ষমতার অপব্যবহার করে কাজ শুরু দেখিয়ে পরের(জুন) মাসেই সম্পূর্ণ বিলটি(৩২,২৯,২৭৯) টাকা লোপাট করে নেই।তথ্য সংগ্রহতে গেলে,বর্তমানে ঐ প্রকল্পটি সৌন্দর্যের পরিবর্তে কলুষিত হয়ে আছে বলে জানান চন্ডিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ব্যাবসায়ী মহল সহ স্থানীয়রা।
আবার আলোচনাই সেই “মন্টু”!
জানাগেছে,ঝাপা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সামসুল হক মন্টুর নিজস্ব এলাকা হওয়াতে ঐ কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সূচি এন্টারপ্রাইজের মালিক পক্ষকে চাপ প্রয়োগ করে এককভাবে হস্তক্ষেপে এই অর্থলুট করেছে মন্টু বলে দাবী করছেন শার্শার সূচি এন্টারপ্রাইজ কর্তৃপক্ষ।
চন্ডিপুর সরকারি পুকুরের গলার কাটা সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ সম্পূর্ণ করতে সাবেক চেয়ারম্যান মন্টু সহযোগিতা নেন মণিরামপুরের আরেক ঠিকাদার মেসার্স প্রেমা এন্টারপ্রাইজের মোঃ সিদ্দিকুর রহমানকে।তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন,ইস্টিমেট অনুযায়ী ঐ প্রকল্পের এখনো অনেক কাজ।
পুকুরের পাশ দিয়ে বর্গাকৃতির ঢালাই এক পাশও আরেক পাশের অর্ধেক কেবল হয়ছিলো,তারপর তো সবাই গা ঢাকা দিলো,তিনি আরো বলেন,কাজ কার সেটা জানতাম না, মন্টু ভাই বলছিলো শেষ করতে,মাঝে মাঝে মোক্তার ভাই(হিসাবরক্ষক) যেতো,অর্কাষ্টন এক ভাই যেতো।আগেই মন্টু ভাইকে খুজে তার সাথে দেখা করতো,শুনছিলাম কাজ শুরু করেই ফাইনাল বিলও তুলেছিলো,বিল তোলার পরও আমি মালামাল,লোক দিয়ে কাজ করায়ে ১১লাখ টাকা বাকি পড়াতে মন্টু ভাইয়ের কাজ ছেড়ে আসছিলাম।
মণিরামপুর এলজিইডি ভবনের অফিসে গত বছর মে মাসের ৩০তারিখে সদ্য শপথ নিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু বসার পরের মাসেই অফিস সহকারি বাপনের মাধ্যমে হিসাবরক্ষক মোক্তার হোসেন একাধিক ফাইলের ভিড়ে অসমাপ্ত কাজের ফাইনাল বিলটি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়েছিলো বলে জানান সহকারি বাপন নিজেই।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ঠিকাদার জানালেন হিসাবরক্ষ মোক্তার হোসেন ও কর্মকর্তা বিদ্যুৎ দাসের দীর্ঘ সময়ে বড় বড় অংকের টাকা ছাড়া কোন বিলের ফাইলে স্বাক্ষর হয়না।কাজের অনেক কাজ শেষ হলেও স্বাক্ষর বাবদ বান্ডেল না দেওয়াতে বিলও আটকে থাকে।আবার বান্ডেলের বিনিময়ে অনকে কাজ শুরু করেই ফাইনাল বিল হয়ে যায়।
হিসাবরক্ষক মোঃ মোক্তার হোসেনের পূর্বে থেকে স্বঘোষিত তিনি, সদ্য বিদায় নেওয়া আ”লীগের সরকার প্রধান শেখ হাসিনা পরিবারের শেখ সেলিমের জামাই বলে এমন কার্যকলাপের পরও বহাল তবিয়তে মণিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী(এলজিইডি) কার্যালয়ে একক অধিপত্য ধরে রেখেছে।আর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের সমস্ত উন্নয়নের স্বাক্ষী হয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রীর একনিষ্ঠ কর্মকর্তা মণিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী প্রধান বিদ্যুৎ দাস।